গুরই ইউনিয়ন পরিষদ,নিকলী, কিশোরগঞ্জ ।
ইউনিয়নের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস :
কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী থানাধীন হাজার বছরের পুরনো গ্রাম শুরই। শুরই নামের উৎপত্তি সম্পর্কে সঠিক কোন তথ্য পাওয়া যায়নি তবে জনশ্রুতি আছে যে এই গ্রামে একসময় প্রচুর গুর উৎপন্ন হতো। এই গুর শব্দ থেকেই শুরই নামের উৎপত্তি হয়েছে বলে জানা যায়। গবেষকদের মতে- এই অঞ্চলে একসময় গোড়/গৌড় উপজাতির বাস ছিল। তাঁদের ভাষার নাম ছিল গোড় ভাষা । পরবর্তী সময়ে গোড়ের সাথে ই প্রত্যয় যুগে গুরই নামের উৎপত্তি হয়েছে।
গুরই গ্রামের দক্ষিণ পাশে দাঁড়িয়ে আছে পাঁচশত বছরের প্রাচীন গুরই মসজিদ। এই মসজিদ এলাকাবাসীর কাছে গায়েবী মসজিদ নামেও পরিচিত। ৬৫৬ হিজরী সালে সুলতান মাহমুদের ছেলে সুলতান বারবকশা এই মসজিদ নির্মাণ করেন। প্রাচীন এই গ্রামের উত্তর পাশে নারায়ণ গোস্বামীর বিখ্যাত আখড়া অবস্থিত। শুরই গ্রামের আরেক পরিচিতি ঐতিহ্যবাহী রেই'র মেলা। যেই মেলার প্রধান আকর্ষণ বাউল ও ফকিরি গান । এই মেলাকে আরও বেশি পরিচিতি এনে দিয়েছে মইনুদ্দিন পাগলা নামের আধাতিক সিদ্ধ সাধক। প্রতি বছর ফাল্গুন মাসের প্রথম মঙ্গলবার এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও জারি, সারি, ভাটিয়ালী, মারফতি, যাত্রা ও দলের গানের জন্য এই ইউনিয়ন বিখ্যাত। তৎকালীন দলের গান ও বাউল গানের অন্যতম মধ্যমনি ছিলেন বাউলকরী ওয়ারিশ মিয়া
এই ইউনিয়নের রয়েছে মুক্তিযুদ্ধকালীন গৌরবগাঁথা ইতিহাস। গুরই ইউনিয়নের বীর সন্তানেরা ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন মোঃ দিয়ারিশ মিয়া: ১৯৭৮ সালে তিনি গুরই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন ও পরপর তিনবার চেয়ারম্যান হয়ে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত জনপ্রিয় চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং ১৯৯৮ সালে পুনরায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে ২০০৩ সাল পর্যন্ত জনগণের সেবায় নিয়োজিত ছিলেন।
২০০৩ সাল পর্যন্ত ছাতিরচর গ্রাম শুরই ইউনিয়ন পরিষদের অন্তর্ভূক্ত ছিল। গোরাউত্রা নদীর অন্তরায় পরবর্তীতে ছাতিরচর গ্রাম আলাদা ইউনিয়ন হিসেবে গঠিত হয়। নিকলী উপজেলার মধ্যে ইতিহাস-ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ গুরই একটি অন্যতম ইউনিয়ন
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস